সকালে খালি পেটে কাঠ বাদাম খাওয়ার ১০টি উপকারিতা জেনে নিন
খালি পেটে কাঠবাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও কাঠবাদাম কখন খাওয়া উচিত এ বিষয়ে
সম্পর্কে জেনে রাখা সকলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।আপনি যদি অনলাইনে সার্চ করে সকালে
খালি পেটে কাঠ বাদাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে অনুসন্ধান করে থাকেন তবে
আজকের আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
কেননা সেই সাথে কাঠবাদাম ও কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা, কাঠ বাদামে কি এলার্জি আছে,
কাঠবাদাম খেলে কি মোটা হয়, এবং কাঠ বাদামের ক্ষতিকর দিক গুলো জানতে পারবেন। এই
পোস্টটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে সকালে খালি পেটে কাঠ বাদাম খাওয়ার
উপকারিতা ও কাঠ বাদাম কখন খাওয়া উচিত জেনে নেই।
পোস্ট সূচিপত্র:সকালে খালি পেটে কাঠ বাদাম খাওয়ার উপকারিতা।কাঠ বাদাম কখন
খাওয়া উচিত
উপস্থাপনা।সকালে খালি পেটে কাঠ বাদাম খাওয়ার উপকারিতা।কাঠ বাদাম কখন খাওয়া উচিত
কাঠবাদাম ছেলে ও মেয়ে উভয়ের জন্য ভিটামিন সমৃদ্ধ গুরুত্বপূর্ণ একটি
খাবার।কাঠবাদাম শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং শরীরের ফোলা ভাব কমায়। এছাড়াও
কাঠবাদাম এ থাকার ভিটামিন শরীরে যৌবন ধরে রাখতে সাহায্য করে? হয়তোবা অনেকের কাছে
অবিশ্বাস্য মনে হবে কাঠবাদামের অনেক উপকারিতা রয়েছে।
আজকে আর্টিকেলে আমরা কাঠ বাদাম সম্পর্কিত সকালে খালি পেটে কাঠবাদাম খাওয়ার
উপকারিতা ও কাঠ বাদাম কখন খাওয়া উচিত এ বিষয় সম্পর্কে আপনাদের সামনে উল্লেখ
করবো। সেই সাথে কাঠবাদাম খেলে কি মোটা হয়, গর্ভাবস্থায় কাঠ বাদাম খাওয়ার
নিয়ম,
এবং কাঠবাদাম ও কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা তুলে ধরার চেষ্টা করব। আশা করি
আজকের আর্টিকেল সম্পূর্ণ পড়ে আপনার অনেক উপকারে আসবে। তাই শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি
পড়ার অনুরোধ রইল।
গর্ভাবস্থায় কাঠ বাদাম খাওয়ার নিয়ম
গর্ভাবস্থায় কাঠ বাদাম খাওয়া বেশ উপকারী হতে পারে, তবে কিছু নিয়ম মেনে চলা
জরুরি। কাঠ বাদামে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়াম, ফাইবার এবং
স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে, যা মায়ের স্বাস্থ্য এবং ভ্রূণের বিকাশের জন্য ভালো।
গর্ভাবস্থায় কাঠ বাদাম খাওয়ার নিয়ম:
- পরিমাণে নিয়ন্ত্রণ: প্রতিদিন ৮-১০টি কাঠ বাদাম খাওয়া নিরাপদ এবং উপকারী। অতিরিক্ত বাদাম খেলে ক্যালোরি ও ফ্যাট বেশি হতে পারে।
- অতিরিক্ত লবণ বা মশলা এড়িয়ে চলা: লবণ বা মশলা দেওয়া বাদাম না খাওয়া ভালো, কারণ অতিরিক্ত লবণ রক্তচাপ বাড়াতে পারে।
- ভেজানো বাদাম: রাতে কাঠ বাদাম ভিজিয়ে রেখে সকালে খেলে তা আরও সহজপাচ্য হয় এবং পুষ্টিগুণও বৃদ্ধি পায়।
- অ্যালার্জি পরীক্ষা করা: যদি কারও বাদামজাতীয় খাবারে অ্যালার্জি থাকে, তবে ডাক্তারকে পরামর্শ করা উচিত।
- বিশুদ্ধ ও সতেজ বাদাম খাওয়া: পচা বা বেশি পুরোনো বাদাম এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ তা স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে।
কাঠ বাদামে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ভ্রূণের মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে
এবং মায়ের হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। তবে, আপনার যদি আগে থেকে কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা
থাকে, তাহলে বাদাম খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয়।
কাঠ বাদাম ও কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা
কাঠ বাদাম (Almond) এবং কিসমিস (Raisins) উভয়ই অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং শরীরের জন্য
নানা ধরনের উপকার বয়ে আনে। এদের স্বাস্থ্য উপকারিতা নিচে উল্লেখ করা হলো:
কাঠ বাদামের উপকারিতা:
- পুষ্টি সমৃদ্ধ: কাঠ বাদামে ভিটামিন E, ম্যাগনেসিয়াম, ফাইবার, এবং প্রোটিন রয়েছে। এটি শরীরের দৈনন্দিন পুষ্টি চাহিদা পূরণে সাহায্য করে।
- হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্যের উন্নতি: কাঠ বাদামে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট (মোনো-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট) হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ: কাঠ বাদাম খেলে দীর্ঘ সময় পেট ভরা থাকে, ফলে ক্ষুধা কমে যায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়।
- ব্রেনের কার্যক্ষমতা বাড়ায়: কাঠ বাদামে উপস্থিত ভিটামিন E এবং অন্যান্য উপাদান স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে।
- হাড়ের মজবুতি: এতে ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকায় এটি হাড়ের গঠন এবং মজবুতিতে সহায়ক।
কিসমিসের উপকারিতা:
- প্রাকৃতিক শক্তির উৎস: কিসমিসে উচ্চমাত্রায় শর্করা থাকে, যা তাড়াতাড়ি শক্তি সরবরাহ করে। এটি শরীরের তাড়াতাড়ি শক্তি পুনরুদ্ধারে সহায়ক।
- আয়রনের উৎস: কিসমিস আয়রন সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে এটি রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
- হজমের উন্নতি: কিসমিসে ফাইবারের পরিমাণ বেশি, যা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সহায়ক।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ: কিসমিসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ফ্রি র্যাডিক্যালস দূর করতে সহায়ক, যা বার্ধক্য প্রতিরোধ এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
- হাড়ের স্বাস্থ্য: কিসমিসে ক্যালসিয়াম এবং বোরন থাকে, যা হাড়ের গঠনে সাহায্য করে এবং হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায়।
এই দুই খাবার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে শরীরের সামগ্রিক
স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়।
সকালে খালি পেটে কাঠ বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
সকালে খালি পেটে কাঠ বাদাম খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে বেশ।কাঠ বাদাম খাওয়া শরীরের
জন্য বেশ উপকারী হতে পারে। কাঠ বাদামে প্রচুর পুষ্টি উপাদান থাকে, যা সার্বিক
স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়ক। কিছু প্রধান উপকারিতা হলো:
ওজন কমাতে সহায়ক: কাঠ বাদাম প্রোটিন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ, যা দীর্ঘ সময়
ধরে পেট ভরা রাখে এবং অতিরিক্ত খাওয়া কমায়।
হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি: এতে ভালো ফ্যাট (মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট)
এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা হৃদপিণ্ডের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
রক্তের চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ: কাঠ বাদাম ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা বাড়াতে
পারে, যা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হয়, বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের
জন্য উপকারী।
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়: এতে থাকা ভিটামিন E এবং অন্যান্য পুষ্টি
উপাদান মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং স্মৃতিশক্তি উন্নত করে।
হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা করে: কাঠ বাদামে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, এবং
ফসফরাস থাকে, যা হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি
কমায়।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি: এতে থাকা ভিটামিন E এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে
স্বাস্থ্যকর এবং উজ্জ্বল রাখে।
তবে খেয়াল রাখতে হবে যে অতিরিক্ত বাদাম খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এতে
প্রচুর ক্যালরি থাকে।
কাঠ বাদাম কখন খাওয়া উচিত
কাঠ বাদাম (Almonds) যে কোনো সময়ই খাওয়া যায়, তবে দিনের কিছু সময়ে খেলে এটি
বিশেষ উপকারী হতে পারে। যেমন:
- সকালে খালি পেটে: কাঠ বাদাম সকালে খালি পেটে খেলে এটি শরীরকে শক্তি যোগায় এবং মেটাবলিজম বাড়ায়।
- খাবারের মাঝে স্ন্যাকস হিসেবে: দুপুরের বা বিকেলের খাবারের মাঝে কাঠ বাদাম খেলে এটি ক্ষুধা কমায় এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে। এতে অযথা অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে।
- ওয়ার্কআউটের আগে বা পরে: কাঠ বাদাম প্রোটিন ও ভালো ফ্যাটের উৎস হওয়ায়, ওয়ার্কআউটের আগে বা পরে খেলে এটি মাংসপেশি গঠনে সহায়ক হয়।
- তবে, দিনে ৮-১০ টির বেশি কাঠ বাদাম খাওয়া উচিত নয়।
কাঠ বাদামে কি এলার্জি আছে
কাঠ বাদামে (tree nuts) এলার্জি থাকা সম্ভব। কাঠ বাদামের মধ্যে যেমন আখরোট, কাজু,
পেস্তা, বাদাম ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত হয়। এই ধরনের বাদামে এলার্জি থাকলে খাওয়ার পর
শরীরে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, যেমন চুলকানি, ফোলাভাব, শ্বাসকষ্ট,
হাঁচি, এবং মারাত্মক ক্ষেত্রে অ্যানাফাইল্যাক্সিস (anaphylaxis) নামক বিপজ্জনক
প্রতিক্রিয়াও হতে পারে।
যাদের কাঠ বাদামের এলার্জি আছে, তাদের এগুলি থেকে সম্পূর্ণভাবে বিরত থাকা জরুরি,
এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এপিপেন (EpiPen) বহন করা উচিত, যেটি
অ্যানাফাইল্যাক্সিস প্রতিক্রিয়া প্রতিরোধে সহায়ক।
কাঠ বাদাম এলার্জি হলো এক ধরনের খাবারের এলার্জি, যা বিভিন্ন ধরনের কাঠ বাদামের
প্রোটিনের প্রতি শরীরের ইমিউন সিস্টেমের অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়ার ফলে হয়। কাঠ
বাদামের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত বাদামগুলো হলো: আখরোট, কাজু, পেস্তা, আমন্ড, ব্রাজিল
বাদাম, হ্যাজেলনাট, ম্যাকাডেমিয়া বাদাম ইত্যাদি।
এলার্জির কারণ: কাঠ বাদামের প্রোটিনকে শরীরের ইমিউন সিস্টেম ক্ষতিকর
পদার্থ হিসেবে ভুলভাবে চিনে নেয় এবং প্রতিক্রিয়া হিসেবে হিস্টামিন ও অন্যান্য
রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ করে। এই কারণে শরীরে এলার্জির লক্ষণ দেখা দেয়।
কাঠ বাদাম এলার্জির লক্ষণসমূহ: কাঠ বাদামের এলার্জি খাওয়ার পর কয়েক মিনিট
থেকে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত:
চুলকানি ও ফুসকুড়ি: শরীরে বা মুখে ফুসকুড়ি উঠতে পারে, এবং চুলকানি হতে
পারে।
ফোলাভাব: বিশেষ করে ঠোঁট, মুখ, গলা বা চোখের চারপাশে ফোলাভাব দেখা দিতে
পারে।
শ্বাসকষ্ট: শ্বাসকষ্ট বা বুকে চাপ অনুভব হতে পারে, যা বেশ বিপজ্জনক হতে
পারে।
পেটে ব্যথা বা বমি: পেটের ব্যথা, বমি বমি ভাব বা ডায়রিয়া হতে পারে।
অ্যানাফাইল্যাক্সিস: এটি এক মারাত্মক প্রতিক্রিয়া, যার ফলে শ্বাস বন্ধ হয়ে
যেতে পারে এবং তাৎক্ষণিক চিকিৎসা না নিলে মৃত্যু হতে পারে। এই অবস্থায় দ্রুত
এপিপেন (EpiPen) ব্যবহার করা দরকার।
এলার্জি পরীক্ষার পদ্ধতি: কাঠ বাদাম এলার্জি শনাক্ত করার জন্য কিছু সাধারণ
পরীক্ষা আছে:
ত্বক পরীক্ষা (Skin prick test): এতে ত্বকে ছোট ছোট বাদামের প্রোটিন
প্রয়োগ করা হয় এবং ত্বকের প্রতিক্রিয়া দেখা হয়।
রক্ত পরীক্ষা: রক্তের মধ্যে ইমিউনোগ্লোবুলিন E (IgE) এন্টিবডির উপস্থিতি
পরীক্ষা করা হয়, যা এলার্জির প্রতিক্রিয়া নির্দেশ করে।
চিকিৎসা ও প্রতিরোধ:
- কাঠ বাদাম এবং তা থেকে তৈরি খাবার এড়িয়ে চলা অত্যন্ত জরুরি।
- খাদ্যের লেবেল ভালোভাবে পড়ে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন যে এতে কাঠ বাদাম নেই।
- চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সবসময় এপিপেন (EpiPen) বহন করতে হবে, যা এলার্জি প্রতিক্রিয়া শুরু হলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবহার করা হয়।
এলার্জি থেকে বাঁচার উপায়:
নতুন খাবার খাওয়ার আগে সবসময় এর উপাদানগুলো সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া।
রেস্টুরেন্টে খাবার অর্ডার দেওয়ার আগে কর্মচারীদের জানানোর জন্য প্রস্তুত থাকা যে
আপনার কাঠ বাদাম এলার্জি আছে।
কাঠ বাদামের এলার্জি থেকে সুরক্ষার জন্য সচেতন থাকা এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া
নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ প্রতিক্রিয়া কখনো কখনো প্রাণঘাতী হতে পারে।
কাঠবাদাম খেলে কি মোটা হয়
কাঠবাদাম খেলে মোটা হওয়া নিয়ে একটা সাধারণ ভুল ধারণা আছে। কাঠবাদাম পুষ্টিকর
এবং এতে প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি, ভিটামিন, ও খনিজ পদার্থ থাকে। এতে থাকা
স্বাস্থ্যকর চর্বি শরীরের জন্য উপকারী এবং মডারেট পরিমাণে খাওয়া হলে ওজন বাড়ার
আশঙ্কা কম।
তবে, অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে ক্যালোরি গ্রহণ বেশি হতে পারে, যা ওজন বাড়াতে পারে।
তাই কাঠবাদাম নিয়মিত এবং পরিমিত পরিমাণে খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয় এবং তা
স্বাস্থ্যকর ডায়েটের অংশ হতে পারে।কাঠবাদাম খেলে মোটা হওয়া বা না হওয়ার
বিষয়টি পুরোপুরি নির্ভর করে কতটুকু পরিমাণে খাওয়া হচ্ছে এবং সামগ্রিক
খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার ওপর।
কাঠবাদাম (Almond) পুষ্টির দিক থেকে অত্যন্ত সমৃদ্ধ একটি খাবার, এতে রয়েছে
স্বাস্থ্যকর চর্বি, প্রোটিন, ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়াম, এবং আঁশ। কিন্তু এতে
ক্যালোরি বেশি, তাই অত্যধিক খেলে ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে।
কাঠবাদামের পুষ্টিগুণ:
স্বাস্থ্যকর চর্বি: কাঠবাদামে মোনোআনস্যাচুরেটেড ও পলিআনস্যাচুরেটেড চর্বি
রয়েছে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- প্রোটিন: এটি প্রোটিনের ভালো উৎস, যা পেশির গঠন ও মেরামতে সহায়ক।
- ভিটামিন ই: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে, যা ত্বক ও চোখের জন্য ভালো।
- ম্যাগনেসিয়াম: এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- আঁশ: হজমশক্তি বাড়াতে এবং পেটের সমস্যা কমাতে সহায়ক।
মোটা হওয়ার সম্ভাবনা: কাঠবাদামে প্রায় ৫৭৫ ক্যালোরি থাকে প্রতি ১০০
গ্রামে, যা অন্যান্য খাবারের তুলনায় বেশ উচ্চ। যদি দৈনিক ক্যালোরির চাহিদা
ছাড়িয়ে কাঠবাদাম খাওয়া হয়, তবে অতিরিক্ত ক্যালোরি জমা হয়, যা ওজন বাড়াতে
পারে।
আরো পড়ুনঃ পাকা কাঁঠাল খাওয়ার ১২টি উপকারিতা
তবে, নিয়মিত পরিমাণে খাওয়া হলে কাঠবাদাম ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিতভাবে সীমিত পরিমাণে বাদাম খায়, তারা সহজে
অতিরিক্ত ওজন বাড়াতে না। কারণ কাঠবাদামে থাকা প্রোটিন ও আঁশ দীর্ঘ সময় ধরে পেট
ভরা রাখে, ফলে ক্ষুধা কমে এবং অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কম হয়।
কাঠবাদাম খাওয়ার সঠিক পরিমাণ: দৈনিক ১০-১৫টি কাঠবাদাম (প্রায় ৩০ গ্রাম)
খাওয়া সাধারণত স্বাস্থ্যকর বলে মনে করা হয়। এটি আপনাকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি
সরবরাহ করবে কিন্তু অতিরিক্ত ক্যালোরি সরবরাহ করবে না।
সুতরাং, কাঠবাদাম খেলে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা আছে, তবে পরিমাণে খেলে এটি স্বাস্থ্য
বজায় রাখার জন্য বেশ উপকারী।
কাঠ বাদামের ক্ষতিকর দিক
কাঠ বাদাম (almonds) স্বাস্থ্যকর হলেও অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে কিছু ক্ষতিকর দিক
দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো:
অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ: কাঠ বাদাম উচ্চ ক্যালোরি সমৃদ্ধ, তাই অতিরিক্ত খেলে ওজন
বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে।
অ্যালার্জি: অনেকের কাঠ বাদামে অ্যালার্জি থাকতে পারে, যা থেকে ত্বকের
র্যাশ, শ্বাসকষ্ট, বমি এবং এমনকি অ্যানাফাইল্যাক্সিসের মতো জটিল পরিস্থিতি হতে
পারে।
অক্সালেটের মাত্রা: কাঠ বাদামে অক্সালেট থাকে, যা অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে কিডনির
সমস্যা যেমন কিডনি পাথরের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
পাচনতন্ত্রের সমস্যা: অতিরিক্ত ফাইবারের কারণে গ্যাস্ট্রিক, ফোলাভাব বা ডায়রিয়া
হতে পারে।
ভিটামিন ই অতিরিক্ততা: অতিরিক্ত কাঠ বাদাম খেলে ভিটামিন ই এর পরিমাণ বেশি হয়ে
যেতে পারে, যা মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা, দুর্বলতা ইত্যাদি সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
সুতরাং, সীমিত পরিমাণে কাঠ বাদাম খাওয়াই স্বাস্থ্যকর।
শেষ কথা। সকালে খালি পেটে কাঠ বাদাম খাওয়ার উপকারিতা।কাঠ বাদাম কখন খাওয়া উচিত
সম্মানিত পাঠক অনেক চিকিৎসকরা বলেন এক বাটি পানিতে কাঠবাদাম রাতভর ভিজিয়ে রাখলে
কাঠ বাদামের ওপরের খোসা খুলে সহজেই বেরিয়ে আসে কাঠ বাদামের ভিতরে সাদা অংশ। এই
অংশ আপনি সাত দিন রেখে খেতে পারবেন। মনে রাখবেন খোসা ছাড়ানো অবস্থায় খেলে
কাঠবাদাম অনেক বেশি কার্যকরী হয়।
আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা
প্রিয় বন্ধরা আশা করি আপনি আমাদের আজকের আর্টিকেল পড়ে ইতিমধ্যে জানতে ও বুঝতে
পেরেছেন সকালে খালি পেটে কাঠ বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও কাঠ বাদাম কখন খাওয়া উচিত
তা জানতে পেরেছে। আমাদের এই পোস্টটি পড়ে কেমন লেগেছে তা আপনার মূল্যবান মতামত
আমাদের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিন।এছাড়া নৃত্যনতুন আপডেট আর্টিকেল পেতে আমাদের
সঙ্গেই থাকুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url